Learn techbd networking bangla
ইলেকট্রোম্যাগনেটিক স্পেকট্রামের গিগাহার্টজ ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করে মাইক্রোওয়েভ ট্রান্সমিশন। এসব ফ্রিকোয়েন্সি রেডিও ফ্রিকোয়েন্সির চেয়ে বেশি হওয়ায় পারফরম্যান্স ও গতি বেশি পাওয়া যায়। মাইক্রোওয়েভ ট্রান্সমিশন সাধারণত দু'ধরনের হতে পারে:-
- টেরেস্ট্রিয়াল এবং
- স্যাটেলাইট।
টেরেস্ট্রিয়াল মাইক্রোওয়েভ ট্রান্সমিশনে লাইন অব সাইট ট্রান্সমিশন ঘটে থাকে। দুটি ডিভাইসের মধ্যে এভাবে ডাটা ট্রান্সমিশনের জন্য তাদের এন্টেনাকে অবশ্যই একই রেখা বরাবর থাকতে হবে এবং মাঝখানে কোনাে বাধা থাকতে পারবে না। এ ধরনের ট্রান্সমিশনে ডিশের মতাে এন্টেনা ব্যবহৃত হয়। এতে রেডিও ট্রান্সমিশনের চেয়ে অনেক বেশি ফ্রিকোয়েন্স- ৪ থেকে ৬ গি.হা. এবং ২১ থেকে ২৩ গি.হা. - ব্যবহৃত হতে পারে। এতে রেডিও পারে। তবে এর জন্য সরকারি কর্তৃপক্ষের অনুমোদন লাগবে। মাঝখানে কোনাে মাঝখানে কোনাে বাধা না থাকলে টেরেস্ট্রিয়াল মাইক্রোওয়েভ ট্রান্সমিশন সিগন্যাল ১- ৫০ মাইল পর্যন্ত যেতে পারে। এর পারে এর মাঝে রিলে টাওয়ার ব্যবহার করা যেতে পারে। সাধারণত এক বিল্ডিং থেকে আরেক বিল্ডিঙে, যেখানে ক্যবলিং সম্ভব হয় না সেখানে। টেরেস্ট্রিয়াল মাইক্রোওয়েভ ট্রান্সমিশন ব্যবহার করে দুই বিল্ডিঙের নেটওয়ার্ককে যুক্ত করা হয়।
টেরেস্ট্রিয়াল মাইক্রোওয়েভ ট্রান্সমিশনের বৈশিষ্ট্যসমূহঃ
- অল্প দূরত্বের জন্য এ পদ্ধতি ব্যবহার করতে চাইলে খরচ তুলনামূলকভাবে কম। কিন্তু বেশি দূরত্বের জন্য করতে গেলে বেশ ব্যয়বহুল হয়ে দাড়ায়।
- এ ট্রান্সমিশন লাইন অব সাইট ব্যবহার করে বলে ইনস্টলেশন কঠিন হয়ে দাড়ায়। ইনস্টলেশনের সময় নিশ্চিত করতে হবে যে, দুই এন্টেনার মাঝে কোনাে বাধা নেই বা ভবিষ্যতে থাকবে না।
- ব্যবহৃত ফ্রিকোয়েন্সি, সিগন্যাল ও এন্টেনার আকারের উপর নির্ভর করে বিভিন্ন মাত্রার এটেনুয়েশন দেখা দিতে পারে। কুয়াশা, বৃষ্টি ইত্যাদিও সিগন্যাল ট্রান্সমিশনে বাধা হয়ে দাড়ায়।
- মাইক্রোওয়েভ ট্রান্সমিশনে EMI প্রতিরােধের ব্যবস্থা নেই। সে কারণে এই ট্রান্সমিশন ইভসড্রপিঙের শিকার হতে পারে। তবে অনেক মাইক্রোওয়েভ ট্রান্সমিশনে এনক্রিপশন ব্যবহার করে ডাটা সুরক্ষিত রাখা হয়। EMI -এর পাশাপাশি আবহাওয়ার কারণেও মাইক্রোওয়েভ ট্রান্সমিশন বিঘ্নিত হতে পারে।
স্যাটেলাইট মাইক্রোওয়েভ ট্রান্সমিশনঃ
স্যাটেলাইট মাইক্রোওয়েভ ট্রান্সমিশনের মাধ্যমে অনেক দূরবর্তী নেটওয়ার্কের সাথে ডাটা ক্যুনিকেশন গড়ে তােলা যায়। এক্ষেত্রে সিগন্যাল পাঠানাের জন্য ভূপৃষ্ঠে স্যাটেলাইট ডিশ এবং শূণ্যে স্যাটেলাইট ব্যবহার করা হয়। শূণ্যের স্যাটেলাইট এবং ভূপৃষ্ঠের স্যাটেলাইট ডিশের মধ্যে দূরত্ব থাকে প্রায় ৫০,০০০ কিলােমিটার।
এ ধরনের ট্রান্সমিশনে ল্যানের কোনাে কম্পিউটার ক্যাবলের মাধ্যমে সিগন্যাল পাঠায় এন্টেনা বা স্যাটেলাইট ডিশের কাছে। স্যাটেলাইট ডিশ সেই সিগন্যাল বীম পাঠায় পৃথিবীর অক্ষে অবস্থিত স্যাটেলাইটের নিকট। সেই স্যাটেলাইট তখন ভুপৃষ্ঠের অন্য কোনাে স্যাটেলাইট ডিশের নিকট সেই সিগন্যাল পাঠিয়ে দেয়। গন্তব্য স্যাটেলাইট ডিশ যদি পৃথিবীর অন্যপ্রান্তে থাকে কিংবা স্যাটেলাইট থেকে সরাসরি সেটিকে দেখা না যায় তাহলে সেই স্যাটেলাইট ওই সিগন্যালকে অন্য স্যাটেলাইটের নিকট পাঠিয়ে দিতে পারে। দ্বিতীয় স্যাটেলাইট যদি গন্তব্য স্যাটেলাইট ডিশকে দেখতে পায় তাহলে সেই সিগন্যাল গন্তব্যে পৌঁছে দেয়।
এ ধরনের ট্রান্সমিশনে সিগন্যালকে প্রথমে ৫০,০০০ কিলােমিটার অতিক্রম করে ভূপৃষ্ঠ থেকে স্যাটেলাইটে পৌছুতে হচ্ছে, তারপর আবার ৫০,০০০ কিলােমিটার অতিক্রম করে ভূপৃষ্ঠে ফেরত আসতে হচ্ছে। এই দূরত্ব অতিক্রমের ফলে সিগন্যাল ট্রান্সমিশনে কিছু বিলম্ব ঘটে। এই বিলম্বকে বলা হয় প্রােপাগেশন ডিলে (propagation)।
স্যাটেলাইট মাইক্রোওয়েভ ট্রান্সমিশনের বৈশিষ্ট্যসমূহঃ
- এতে বেশ উচ্চমাত্রার ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহৃত হয়। এর ফ্রকোয়েন্সি সাধারণত ১১ থেকে ১৪ গিগাহার্টজ হয়ে থাকে।
- স্যাটেলাইট মাইক্রোওয়েভ ট্রান্সমিশনের ব্যয় অত্যধিক। খুব বড় ধরণের নেটওর্য়ার্ক না হলে এবং একান্তই দরকার না হলে এধরণের নেটওয়ার্ক কেউ ব্যবহার করে না। তবে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিশনের মাধ্যমে যে কভারেজ দেয়া যায় সেখানে ক্যাবল ইনস্টল করতে গেলে অনেক অনেকগুন বেশি ব্যয় হবে।
- এটি এটেনয়েশনের শিকার হতে পারে। কুয়াশা, বৃষ্টি ও প্রতিকূল আবহা এ ট্রান্সমিশনকে বিঘ্নত করতে পারে।
- এ ট্রান্সমিশনে EMI প্রভাব ফেলে এবং এতে ইভসড্রপিঙের সম্ভাবনা থাকে।
Post a Comment